কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার

 

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা কম্পিউটার তো অনেক ব্যবহার করে থাকি ঠিকই কিন্তু কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার কি আদৌ জানেন? মূলত আপনাদেরকে কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার দেখানোর জন্যেই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। তাহলে চলুন দেখে দেওয়া যাক কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার।
কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার জানার মাধ্যমে আপনি অনেক জটিল কাজকে খুব সহজেই করে ফেলতে পারবেন। তাই কম্পিউটার এবং কি বোর্ড সম্পর্কে দক্ষতা হবার জন্য আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটারের কি বোর্ড সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে।

পেজ সূচিপত্র: কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার

কি বোর্ডের কাজ

বর্তমানে আমাদের সমাজের প্রত্যেকর মাঝেই কম্পিউটার এবং কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার অনেক লক্ষ করা যায়। এটি কম্পিউটারে সর্বাধিক ব্যবহৃত ইনপুট ডিভাইসগুলোর মধ্যে একটি। এটি কম্পিউটারে বিভিন্ন পাঠ্য লিখতে এবং বিভিন্ন কমান্ড প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়। কীবোর্ডের বিভিন্ন কী-তে বিভিন্ন চিহ্ন তৈরি করা যায়। কীবোর্ডগুলি টাইপরাইটার থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং এটি বোতামগুলির একটি বিন্যাস, যা যান্ত্রিক লিভার বা ইলেকট্রনিক সুইচের মতো কাজ করে। যদিও মাউস, টাচস্ক্রিন, কলম, ভয়েস রিকগনিশন প্রযুক্তি এসেছে কিন্তু কিবোর্ড এখনও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুমুখী ইনপুট ডিভাইস।

কম্পিউটারের কি বোর্ড ব্যবহার জানার গুরুত্ব

কীবোর্ড হলো কম্পিউটার সিস্টেম চালানোর মৌলিক উপাদান তাই কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনাকে পাঠ্য লেখার সময়, ডেটা ইনপুট করার, ওয়েব সার্ফ করার কাজ অনেক সহজ করে দেয়। কম্পিউটার সফলভাবে ব্যবহার করার সময় কীবোর্ডগুলো আপনাকে আপনার টাইপিং দক্ষতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে। এছাড়া প্রোগ্রামিং, গেমিং, মিউজিক প্রোডাকশন, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং ইত্যাদিতে কীবোর্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূলত এইসকল বিষয়গুলোর কারণেই আমাদের সকলে কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার জানতে হবে।

কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার

বর্তমানে কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই আপনাকে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একটি সাধারণ কি বোর্ডে ৮৪ থেকে ১০১টা কী থাকে। অন্যদিকে কিছু কিছু কি বোর্ডে ১০৪ টাও কী লক্ষ করা যায়। প্রয়োজন অনুসারে কি বোর্ডের মধ্যে এই কী এর পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে। ব্যবহারের ভিত্তিতে কীবোর্ডগুলিকে মোটামুটিভাবে 5টি বিভাগে ভাগ করা যায়। নিম্নে তার সংকিপ্ত বর্ণনা করা হলো:
ফাংশন কী: কীবোর্ডের উপরের বাম দিকে F1 থেকে F12 কীগুলোকে সম্মিলিতভাবে ফাংশন কী বলা হয়। এগুলোকে ফাংশন কী বলার কারণ হলো এগুলোর মাধ্যমে কিছু গুরত্বপূর্ণ কাজ খুব সহজেই করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এই কীগুলো একটি প্রোগ্রামকে চালানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
অ্যারো কী: কীবোর্ডের নীচের ডানদিকে চারটি পৃথক কী রয়েছে। কিছু কি বোর্ডের উপরেও রয়েছে। কীগুলো তীর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার সাহায্যে আপনি সহজেই কার্সারকে ডানে, বামে, ওপরে এবং নিচে নিয়ে যেতে পারবেন। এগুলিকে টেক্সট অথবা অন্যকিছু এডিট করার কীও বলা হয়। কারণ এই কীগুলোও টেক্সট এডিটিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়।
আলফাবেটিক কী: কী বোর্ডের যে অংশে ইংরেজি বর্ণমালা A থেকে Z পর্যন্ত মোট 26টি কী আছে তাকে আলফাবেটিক কী বলে।
নিউমেরিক বা লজিক্যাল কী: কীবোর্ডের ডানদিকে 0 থেকে 9 নম্বরের কীগুলোকে নিউমেরিক কী বলে। +, -, *, / ইত্যাদির মতো অ্যারিথমেটিক অপারেটর রয়েছে। এছাড়াও লজিক্যাল অপারেটর <, >, = কী বোর্ডে রয়েছে।
বিশেষ কী: উল্লেখিত কীগুলো ছাড়াও কি বোর্ডের অন্যান্য কীগুলো কিছু বিশেষ কাজ সম্পাদন করে, তাই তাদের বিশেষ কী বলা হয়। যেমন:
  • Esc: যেকোনো কমান্ড বাতিল করতে এই কী ব্যবহার করুন।
  • Tab: এই কীটি প্রয়োজন অনুসারে পর্দায় অনুচ্ছেদ, কলাম, সংখ্যা, অনুচ্ছেদ শুরুর স্থান ইত্যাদি প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়।
  • Caps Lock: ইংরেজি ছোট হাতের এবং বড় হাতের অক্ষর টাইপ করতে এই কী ব্যবহার করুন।
  • Shift: এই কীটি একই শব্দের মধ্যে বা শুরুতে বড় এবং ছোট হাতের অক্ষর টাইপ করতে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, Dhaka, Khulna শব্দ লিখতে প্রথম অক্ষরে শিফট কী টিপুন এবং পরের অক্ষরে শিফট কীটি ছেড়ে দিন। এবং বাংলা বা বর্ণমালা লিখতে এই কীটি লেআউট কী-এর উপরে এবং নীচে টাইপ লেখার জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, শিফট কী সহ ফাংশন কী টিপে কম্পিউটারে বিভিন্ন কমান্ড দেওয়া হয়।
  • Ctrl: এই কী সহ বিশেষ কী টিপে কমান্ড জারি করা হয়। ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য কীবোর্ডের ডান এবং বাম দিকে 2টি কী রয়েছে।
  • Alt: এই কীটি বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভিন্ন ভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে এবং বিভিন্ন কমান্ড তৈরি করতে পারে।
  • Enter: এই কী কম্পিউটারে একটি নির্দেশ কার্যকর করতে ব্যবহৃত হয়। লেখার জন্য নতুন অনুচ্ছেদ তৈরি করতেও এই কী ব্যবহার করা হয়।
  • Pause Break: যদি দ্রুত গতির জন্য কম্পিউটারে কোনও পাঠ্য পড়তে অসুবিধা হয় তবে এই কীটি পড়া যেতে পারে।
  • Print Screen: কম্পিউটার স্ক্রিনে দৃশ্যমান সবকিছু প্রিন্ট করতে এই কী ব্যবহার করুন।
  • Delete: কোন বাক্য, অক্ষর বা লেখা মুছে ফেলার জন্য এই কী ব্যবহার করা হয়
  • Home: এই কীটি কার্সারটিকে পৃষ্ঠার শীর্ষে নিয়ে আসে। যাইহোক, এমএস ওয়ার্ডে একটি নথি লেখার সময়, কার্সারটিকে প্রথম পৃষ্ঠায় আনতে, একসাথে Ctrl+Home টিপুন।
  • End: এই কী টিপলে কার্সার বা পয়েন্টার পাঠ্য বা পৃষ্ঠার শেষে যেখানেই থাকুক না কেন।
  • Page Up: কার্সারকে উপরের দিকে সরাতে এই কী ব্যবহার করুন।
  • Page Down: কার্সারকে নিচে নিয়ে যেতে এই কী ব্যবহার করুন।
  • Insert: যদি একটি পাঠ্যের মধ্যে কিছু লেখা থাকে তবে এটি সাধারণত পাঠ্যের ডানদিকে লেখা হয়, তবে এই কী টিপলে পূর্ববর্তী অক্ষরটি ওভাররাইট হবে। কাজ শেষে আবার এই কী চাপলে আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
  • Back Space: এই কী ব্যবহার করা হয় কোনো লেখার পেছনের স্থান মুছে ফেলার জন্য।
  • Space bar: কীবোর্ডের কীগুলির মধ্যে এই কীটি দীর্ঘতম। একটি দীর্ঘ বাক্য লেখার সময় এই কীটি শব্দের মধ্যে ফাঁক করতে ব্যবহৃত হয়।
  • Num Look: এই কী টিপলে ডানদিকের কীগুলো চালু হয়।
মাল্টিমিডিয়া কি: উল্লেখিত কী গুলো ছাড়াও মাল্টিমিডিয়া কীবোর্ডে আরও ৪টি কী রয়েছে:
  • Stand by mood: এই কী চেপে রাখলে কম্পিউটার চালু থাকবে কিন্তু মনিটর বন্ধ থাকবে।
  • Mail key: এই কী টিপে আউটলুক এক্সপ্রেস চালু হয় এবং এর মাধ্যমে মেইল পাঠানো যায়। কিন্তু ইন্টারনেট চালু থাকতে হবে।
  • Web key: এই কীটি সরাসরি ওয়েব ব্রাউজার খুলতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারেন।
  • Start menu key: স্টার্ট মেনু খুলতে এবং প্রয়োজনীয় কমান্ড সম্পাদন করতে এই কী চাপুন।

কম্পিউটারের কি বোর্ড ব্যবহারে সতর্কতা

কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার করার সময় আপনাকে অবশ্যই কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে সতর্কতা মেনে চলেন তাহলে এটি আপনার নিজের এবং আপনার কি বোর্ডের জন্যেও উপকারী হবে। অন্যথায় আপনাকে যেকোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে আর নয়তো আপনার কি বোর্ডটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই খেয়াল রাখবেন কি বোর্ডের সামনে যেনো কোনো ধরনের খাবার কিংবা পানি রাখা না হয়, এগুলো কি বোর্ডে পড়লে এটি নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। পানির পড়লে এর মধ্যে শর্ট সার্কিট হবার সম্ভাবনা থাকে।

শেষ কিছু কথা

বর্তমান সময়ে মানুষ নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্নভাবে কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার করে চলেছে। আপনি চাইলে শুধুমাত্র কি বোর্ডের ব্যাবহার করেই আপনার পুরো কম্পিউটারকে পরিচালনা করতে পারবেন। এছাড়াও কম্পিউটার এবং কি বোর্ডের মাধ্যমে আর্টিকেল রাইটিং করে মানুষ টাকাও ইনকাম করছে। তাই দিনে দিনে এর ব্যাবহার বাড়তেই আছে এবং মানুষের কাছে এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আপনাকে কম্পিউটারের কি বোর্ড ব্যবহার সঠিকভাবে জানতে হবে এবং সঠিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আশা করি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনি কম্পিউটারের কি বোর্ড এর ব্যবহার জানতে পেরেছেন। এমন আরো স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, কম্পিউটার ও টেকনোলজি রিলেটেড টিপস আর ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইট। এতোক্ষন মন দিয়ে আমাদের আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।২৬১৪২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url