আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আপেল খাওয়ার সঠিক সময়

 

আপনি কি আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে খুব সহজে জানতে পারবেন আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।তাই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন তাহলে জানতে পারবেন আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। 

তাহলে চলুন আর দেরি না করে আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, আপেল খাওয়ার সঠিক সময়, আপেল খেলে কি হয়, বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে আসি।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আপেল খাওয়ার সঠিক সময়

পেজ সূচিপত্র: আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আপেল খাওয়ার সঠিক সময় 

  • ভূমিকা 
  • আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 
  • আপেলের পুষ্টিগুণ 
  • আপেলের পুষ্টি উপাদান
  • গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা 
  • আপেল খাওয়ার সঠিক সময় 
  • সবুজ আপেলের উপকারিতা 
  • শেষ কথা: আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আপেল খাওয়ার সঠিক সময় 

ভূমিকা: আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আপেল খাওয়ার সঠিক সময়  

আপেল এমন একটি ফল যেটাতে প্রায় সকল ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে। আপেল অনেক মিষ্টি জাতীয় একটি ফল। বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই আপেল পাওয়া যায়। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই আপেলের চাষ হয়ে থাকে। সব থেকে বেশি চাষ করা হয় জেনাস ম্যলুস প্রজাতিতে। আপেল প্রায় সব রীতিতে পাওয়া যায়। প্রাচীনকাল থেকে আপেলের ইংরেজি প্রচলন ছিল এইপল। 

কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে এইপল থেকে আপেলে রূপান্তরিত হয়েছে। আপেলের বৈজ্ঞানিক নাম "ম্যালাস  ডোমেস্টিকা"। আপেল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। আপেল কখন খাওয়া উচিত,কখন খাওয়া উচিত না এসব জেনে খাওয়া ভালো। আপেলের রয়েছে ফাইবার যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। 

ডাক্তারদের মতে দৈনন্দিন খাবারের তালিকা আপেল রাখা জরুরী। বাংলাদেশে আপেল গাছ খুব একটা দেখা যায় না। ভারতের কাশ্মীরে আপেল ভালো পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ফিরোজপুরে এবং সিরাজগঞ্জে আপেল গাছ এবং চারা পাওয়া যায়। বাংলাদেশে আপেল গাছ খুব ভালো না জন্মালেও বাংলাদেশে আপেল খুব জনপ্রিয় একটি ফল হিসেবে পরিচিত।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আপেল খাওয়ার উপকারিতা:

আপেলে পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। আপেলে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আপেল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আপেলের মধ্যে ফাইবার থাকায় হজমে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করে। চলুন আপেলের উপকারিতা সমূহ জেনে নেওয়া যাক।

1. আপেলে আন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

2. আপেল হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

3. আপেলের  উচ্চ মাত্রায় জলীয় উপাদান রয়েছে যা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।

4. আপেলের বিদ্যমান ফাইবার যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

5. আপেলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো মস্তিষ্কের কোষ গুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে যার ফলে শরীর অসুস্থতা থেকে সহজে রক্ষা পায়।

6. খাদ্য তালিকার উন্নতম একটি উৎস হচ্ছে আপেল যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 

7. আপেলে ফাইবার থাকায় লিভারের গতি শক্তিকে বৃদ্ধি করে। 

8. আপেলের ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। 

আপেল খাওয়ার অপকারিতা: 

আপেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ফাইবার রয়েছে। এসব উপাদান গুলো মানব দেহের বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। তবে এসব পরিমাণে বেশি হলে হতে পারে নানা সমস্যা। সব খাবারের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা থাকে। চলুন অতিরিক্ত আপেল খাওয়ার অপকারিতা জেনে আসি।

1. অল্পবয়সী বা বাচ্চাদের আপেল খাওয়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। না হয় বাচ্চাদের গলায় আপেল আটকে যেতে পারে।

2. আপেলে প্রাকৃতিক এসিড বিদ্যমান রয়েছে।যার ফলে বেশি খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।

3. অতিরিক্ত আপেল খেলে পেটে ব্যথা বা বমি হতে পারে। 

4. আপেলে উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকে যার কারণে বেশি খেলে পেট ফাঁপা কষ্ট সহ্য করতে হতে পারে। 

5. আপেলে প্রাকৃতিক চিনিতে ভরপুর।যার কারণে বদ হজম হতে পারে।তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা যাদের দীর্ঘদিন থেকে তারা আপেল খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।

6. আপেল অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার।হওয়ায় গর্ভবতী ও স্তনপান করানো মহিলারা আপেল খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিলে ভালো হয়।

আপেলের পুষ্টিগুণ: প্রতি ১০০ গ্রাম আপেলের রয়েছে:

আপেলের পুষ্টিগুণ
1. খাদ্যশক্তি ৫২ কিলো ক্যালরি 

2. শর্করা ১৩.৮১ গ্রাম 

3. আমিষ ০.২৬ গ্রাম 

4. ফাইবার 2.4 গ্রাম 

5. চর্বি ০.১৭ গ্রাম 

6. ম্যাগনেসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম 

7. জিংক  ০.০৪ মিলিগ্রাম 

8. লৌহ  ০.১২ মিলিগ্রাম 

9. সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম 

10. পটাশিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম 

11. ক্যালসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম 

12. ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম 

13. কোলেস্টরল ০ মিলিগ্রাম 

14. ভিটামিন এ ৫  আইইউ 

15. ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম

16. ভিটামিন ই ০.১৮ মিলিগ্রাম 

আপেলের পুষ্টি উপাদান সমূহ:

mmm1. খাদ্য শক্তি 

2. আমিষ 

3. শর্করা 

4. ফাইবার 

5. চর্বি 

6. ভিটামিন এ 

7. ভিটামিন সি 

8. ভিটামিন ই

9. পটাশিয়াম 

10. ক্যালসিয়াম 

11. ম্যাগনেসিয়াম 

12. সোডিয়াম 

13. জিংক 

14. লৌহ 

15. কোলেস্টেরল 

16. ফসফরাস। 

গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা:

গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা

1. আপেলের ফলিক এসিড থাকার কারণে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।

2. আফের মানবদেহে হিমোগ্লোবিনের অভাবে পূরণ করে।

3. গর্ভবতী মা ও শিশুর হাড় ও গঠন মজবুত করতে আপেলের গুরুত্ব অনেক। 

4. আপেল গর্ভে থাকা বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করে। 

5. নিয়মিত মা আপেল খাওয়ার গভের শিশুর এলার্জির জাতীয় রোগ কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

6. গর্ভাবস্থায় আপেল খাওয়ায় শিশুর হাঁপানি ঝুকি হ্রাস পায়। 

আপেল খাওয়ার সঠিক সময়:

আপেল খাওয়ার সঠিক সময়

সকালে ঘুম থেকে অথবা দুপুরে খাবার আগে বা খাবারের ৩০ মিনিট পর আপেল খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।কারণ বাংলার একটি প্রবাদ রয়েছে প্রতি দিন একটা আপেল ডাক্তার থেকে দূর রাখে। আপেলের রয়েছে অনেক ভিটামিন। পুষ্টিবিদদের মতে সকালবেলা আপেল খাওয়ার উপযুক্ত সময়। অনেকের অপর্যাপ্ত ঘুমের সমস্যা তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে আপেল খেলে ঘুমের সমস্যা দূর হবে।আপেল খালি পেটে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। যা কিনা হজম করতে সাহায্য করবে। তাছাড়া সুগার লেভেল কে ধরে রাখতে এবং হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

সবুজ আপেলের উপকারিতা:

সবুজ আপেলের উপকারিতা

আপেল সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে, লাল ও সবুজ। লাল আপেল থেকে সবুজ আপেলের  গুনাগুন অনেক বেশি। সবুজ-আপেলের উপকারিতা সমূহ:

1. সবুজ আপেলে জৈব এসিড উপাদান থাকায় ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণ রাখে। যাদের বারবার ক্ষুদা লাগার সমস্যা থাকে তারা সবুজ আপেল খেয়ে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে।

2. হাঁপানি রোগীরা প্রতিদিন সবুজ আপেল খেলে উপকার পাবেন। 

3. লিভার ভালো রাখতে নিয়মিত সবুজ আপেল খাওয়ার উপকার অনেক বেশি। 

4. ত্বকের যত্নে সবুজ আপেলের  তুলনা অপরিসীম।

5. সবুজ আপেল খেলে দাঁত এবং হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে।

শেষ কথা আপেল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আপেল খাওয়ার সঠিক সময়ঃ 

আজকে আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সহজ ভাবে আপেল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপেল খাওয়ার নিয়ম, আপেলের পুষ্টিগুণ, এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লাগে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিবেন। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপেল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জেনে অনেক উপকৃত হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url