করলা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং করলার পুষ্টিগুণ
করলা এমন একটি সবজি যা খেতে অনেক তিতা। করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। করলা তিতা বলে অনেকে খাওয়া থেকে দূরে থাকে। আবার অনেকে খুবই পছন্দ করে করলা খেতে। আমরা করলা খেয়ে থাকি, কিন্তু করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। আজকের পোষ্টের মাধ্যমে করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব।
করলা এমন একটি সবজি যারা আমাদের শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে। ডায়াবেটিসের সমস্যার মহৌষধ হল তেতো। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে করলা খুবই উপকারী সবজি। করলা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক,আয়রন ও বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন। সকালে খালি পেটে করলার রস হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।
অনেকে করোলা তিতা বলে খেতে পারে না। তারা ভাজি বা ভর্তা করেও খেতে পারেন। তাছাড়া করলা চিংড়ির সাথে ভাজি, ডালের সঙ্গে রান্না করে ও খেতে পারেন। করলাতে রয়েছেন ব্লাড সুগার যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। করলার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে এজমা, ব্রস্কাইটিস, ও শ্বাসরোধের মতো সমস্যা জনিত রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
পেজ সূচিপত্র: করলা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং করলার পুষ্টিগুণ
- করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
- তিতা করলার উপকারিতা
- করলার পুষ্টিগুণ
- শেষ কথা: করলা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং করলার পুষ্টিগুণ
করলা খাওয়ার উপকারিতা:
1. কাঁচা করলার রস খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন প্রবেশ করে যা দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
2. প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস খাওয়ার মাধ্যমে রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
3. কাঁচা করলা ক্যান্সারের মত মরণ রোগ থেকে ও দূরে রাখে।
4. করলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়।
5. এলার্জির সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন করলার রস বা করলার পাতার রস খেলে এলার্জি ভালো হয়।
6. যাদের মুখের অরুচি সমস্যা ক্ষুধা লাগে না তারা করলার রস সকাল বিকাল খেতে পারে। হজম শক্তি বাড়ার পাশাপাশি ক্ষুদা বাড়াবে।
7. তিতা করলা লিভার সম্পর্কিত রোগের নিরাময় করে।
8. হাঁপানির জন্য করলা খুবই উপকারী।
9. স্বাস্থ্য যত্নের ক্ষেত্রে তিতা করলা খুবই উপকারী। করলাতে ফসফরাস রয়েছে যা কফের অভিযোগ মুছে ফেলে।
10. করলায় থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা গ্যাস্ট্রিকের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ও পেটের বিভিন্ন রোগ কমাতে শুরু করে।
11. করলা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ সারাতে বেশ ভালো কাজ করে।
12. করলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বকের বলি রেখা ও শুষ্কতা ভাব দূর করে।ত্বককে করে লাবণ্যময়।
13. ১০০ গ্রাম করলাতে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
14. করলার ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকার ওজন বাড়াতে দেয় না।তাই করলা সুষম উপাদান ওজন কমাতে উপকারী।
15. পাইলসের যন্ত্রণায় যারা ভোগেন তারা কাঁচা করলার পাশাপাশি করলার মূল বেটে পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারে এতে উপকারও বেশি পাওয়া যাবে।
করলা খাওয়ার অপকারিতা:
1. করলার রস বেশি খেলে পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া হতে পারে।
2. ডায়াবেটিস রোগীরা ও যে কোন ওষুধ সেবনকারীরা করলা খাওয়ার আগে ডাক্তার পরামর্শ নিবেন।
3. আয়ুর্বেদ অনুসারে করলার রস বেশি খাওয়ার মাধ্যমে শুক্রাণুর গুনাগুন হ্রাস পায়।
4. গর্ভবতী মহিলারা করলার রস খাওয়ার মাধ্যমে খিচুনিতে আক্রান্ত হতে পারে এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
5. হার্টের সমস্যায় বেশি করলা খাওয়া উচিত নয়।
6. করলা খাওয়ার পর ভুলেও দুধ পান না করা ভালো এতে পেটের সমস্যা হতে পারে।
7. করলার তরকারি খাওয়ার পর মুলা জাতীয় তরকারি খাওয়া যাবেনা। এতে এসিডিটি বেড়ে যেতে পারে।
8. করলা খাওয়ার পর দই খাওয়াও ঠিক নয়।
9. করলা খাওয়ার পর আম খাওয়া ঠিক নয় এতে বুক জ্বালায এসিডিটি হতে পারে।
খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা:
2. করলার জুস এলার্জি ও এ্যাজমা কমাতে সহায়তা করে।
3. ত্বকের উজ্জ্বলতায় করলার জুস কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
4. খালি পেটে করলার জুস খাওয়ায় হজম প্রক্রিয়া সহজ করে।
5. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ও খালি পেটে করলার জুস অধিক উপকারী।
6. খালি পেটে করলার রস খেলে নানা রোগব্যাধির আশঙ্কা কমে।
7. পুষ্টি বিদ্যার মতো সকালে খালি পেটে করলার রস খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
8. খালি পেটে করলার রস শর্করা মাত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
9. খালি পেটে করলার রস ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।
10. লিভার ভালো রাখতে করলার রস খালি পেটে খাওয়া উচিত।
তিতা করলার উপকারিতা:
2. তিতা করলা ই-কোলাই নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
3. তিতা করলা ওষুধে থেকেও রক্তে সুগার কমাতে বেশি ভূমিকা রাখে।
4. তিতা করলায় আছে বিটা ক্যারোটিন যা চোখের দৃষ্টি ভালো রাখে এবং দাঁত ও হাড় ভালো রাখে।
5. স্কিন ডিজিজ ও ইনফেকশন প্রতিরোধে তিতা করলা সাহায্য করে।
6. তিতা করোলা উচ্চ রক্তচাপ ও চর্বি কমায়।
7. নিয়মিত করলা খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
করলার পুষ্টিগুণ: ১০০ গ্রাম করলায় রয়েছে:
2. লিপিড ০.২ গ্রাম
3. সম্পৃক্ত চর্বি ০ গ্রাম
4. সোডিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম
5. পটাশিয়াম ৬০২ মিলিগ্রাম
6. শর্করা সাত
7. শর্করা ৭ গ্রাম
8. খাদ্য আঁশ ১.৯০ গ্রাম
9. প্রোটিন ৩.৬০ গ্রাম
10. ম্যাগনেসিয়াম ৯৪ মিলিগ্রাম
11. ক্যালসিয়াম ৪২ মিলিগ্রাম
12. পাইরিডপিন ০.৮০ মিলিগ্রাম
13. লৌহ ১ মিলিগ্রাম
14. ভিটামিন সি ৫৫.৬ মিলিগ্রাম
শেষ কথা: করলা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং করলার পুষ্টিগুণ
করলার বহু উপকারিতা রয়েছে। যারা করলা তিতা বলে খেতে পছন্দ করে না তাদের জন্য হতাশাজনক।করলা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী সবজি। নিজেকে সুস্থ রাখতে করলা খাওয়া বেশি দরকারি। আজকে করলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি করলার উপকারিতা জেনে অনেকেই খাবেন।
কিন্তু সবকিছুর উপকারিতা ও অপকারিতা আকর্ষণ বা বিকর্ষণ থাকে। তাই করলাও উপকারিতা অপকারিতা রয়েছে। যেভাবে খেলে ক্ষতি হবে ওইভাবে না খেয়ে উপকার পাওয়ার মতো খাওয়া উচিত। আজকের আর্টিকেল যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিবেন। ধন্যবাদ...
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url