ডালিমের ১২ উপকারিতা অপকারিতাঃ(ডালিমের বিচির উপকারিতা)

 

প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা জানতে যাচ্ছি ডালিমের ১২ উপকারিতা অপকারিতাঃ(ডালিমের বিচির উপকারিতা) সম্পর্কে। ডালিম, যা আমাদের কাছে আনার বা বেদনা নামেও পরিচিত, একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। আজকের পোষ্টে ডালিমের (আনার বা বেদনা) উপকারিতা ও অপকারিতা, ডালিমের জুসের উপকারিতা, ডালিমের বিচির উপকারিতা, ডালিমের খোসার ব্যবহার, ডালিমের রসের উপকারিতা, ডালিমের পুষ্টিগুণ, গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা, খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক ডালিম খাওয়া উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

ডালিমের ১২ উপকারিতা অপকারিতাঃ(ডালিমের বিচির উপকারিতা)
ডালিমের অভ্যন্তরে লালচে বীজ থাকে, যা খেতে মিষ্টি ও রসালো। ডালিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং ফাইবার রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর। ডালিমের রস ও বীজ উভয়ই বিভিন্ন রান্না ও পানীয়তে ব্যবহার করা হয়। ফলে, ডালিম একটি জনপ্রিয় ও বহুমুখী ফল। এই ফলটি পছন্দ করে না এমন মানুষ খুবই কম। ছোট বড় সকলের পছন্দের এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। তবে ডালিমের দাম একটু বেশি হ‌ওয়ায় অনেকেই এটি খেতে পারে না। 

পেজ সূচিপত্রঃ ডালিমের ১২ উপকারিতা অপকারিতাঃ(ডালিমের বিচির উপকারিতা) 

  • ডালিমের উপকারিতা 
  • ডালিমের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক
  • ডালিমের জুসের উপকারিতা 
  • ডালিমের বিচির উপকারিতা
  • ডালিমের খোসার ব্যবহার 
  • ডালিমের রসের উপকারিতা 
  • ডালিমের পুষ্টিগুণ
  • গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা
  • খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা
  • শেষ কথাঃ ডালিমের ১২ উপকারিতা অপকারিতাঃ(ডালিমের বিচির উপকারিতা)

ডালিমের উপকারিতা: 

ডালিমের উপকারিতা
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আমরা সবাই মিলে এখন জানার চেষ্টা করব ডালিমের উপকারিতা নিয়ে। ডালিমের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু প্রধান উপকারিতা হলো:

১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: ডালিমে পিউনিক্যালজিন এবং পিউনিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে।

২. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: ডালিম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।

৩. প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ডালিমে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৪. পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারী: এতে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৫. ত্বকের যত্ন: ডালিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে বয়সের ছাপ কমাতে এবং উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সহায়ক।

৬. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: ডালিমে থাকা যৌগগুলি স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

৭. আলঝাইমার্স প্রতিরোধ: ডালিম মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে, যা আলঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

ডালিমের এসব উপকারিতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এর গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

ডালিমের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক:

ডালিমের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক

উপরে আমরা ডালিমের উপকারিতা নিয়ে কথা বলেছি, এখন আমরা কথা বলব ডালিমের অপকারিতা নিয়ে। ডালিম সাধারণত একটি স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ ফল হিসেবে বিবেচিত হলেও কিছু ক্ষেত্রে কিছু অপকারিতা থাকতে পারে:

১. অ্যালার্জি: কিছু লোকের ডালিম বা এর রস খাওয়ার পরে অ্যালার্জি হতে পারে। লক্ষণগুলির মধ্যে ত্বকের ফুসকুড়ি, চুলকানি, এবং শ্বাসকষ্ট অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

২. রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে: যেহেতু ডালিম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, রক্তচাপ কমানোর ওষুধ গ্রহণকারী ব্যক্তিদের এটি খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত।

৩. ডায়রিয়া: অতিরিক্ত ডালিম খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।

৪. ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া: কিছু ঔষধের সাথে ডালিমের রস মিথস্ক্রিয়া করতে পারে, যেমন রক্ত পাতলা করার ঔষধ বা উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ।

৫. গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময় সতর্কতা: গর্ভবতী এবং স্তন্যদায়ী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ডালিম বা এর রস অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত নয়।

এই কারণে, ডালিম খাওয়ার আগে যদি কোনো শারীরিক সমস্যা বা ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডালিমের জুসের উপকারিতা: 

ডালিমের জুসের অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর কিছু প্রধান উপকারিতা হলো:

১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: ডালিমের জুসে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

২. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে: ডালিমের জুস রক্তচাপ কমাতে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

৩. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: ডালিমের জুস স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে, কারণ এটি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৪. প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ডালিমের জুস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর।

৫. ত্বকের যত্ন: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ডালিমের জুস ত্বককে উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখতে সহায়ক এবং বয়সের ছাপ কমাতে পারে।

৬. হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে: ডালিমের জুসে ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ডালিমের জুসের এসব উপকারিতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পানীয় হিসেবে বিবেচিত করতে সহায়ক।

ডালিমের বিচির উপকারিতা: 

ডালিমের বিচির উপকারিতা

এবার আমরা জানব ডালিমের বিচির উপকারিতা নিয়ে। ডালিমের বিচির বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নিচে কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:

১. ডালিমের বিচি কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।

২. ডালিমের বিচি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।

৩. ডালিমের বিচিতে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৪. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বিচি ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক এবং বয়সের ছাপ কমাতে কার্যকর।

৫. ডালিমের বিচি কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে।

৬. ডালিমের বিচি রক্ত শুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়ক।

এই উপকারিতাগুলো ডালিমের বিচিকে একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে প্রমাণিত করে।

ডালিমের খোসার ব্যবহার: 

ডালিমের খোসার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে এবং এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিচে কিছু প্রধান ব্যবহার ও উপায় উল্লেখ করা হলো:

১. ত্বকের যত্ন:ডালিমের খোসার ব্যবহার

    - ফেস প্যাক: ডালিমের খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এতে দই বা গোলাপজল মিশিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ব্রণ প্রতিরোধ করে।

    - স্ক্রাব: খোসার গুঁড়ো ও চিনি মিশিয়ে প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ করে।

২. চুলের যত্ন:ডালিমের খোসার ব্যবহার

    - স্ক্যাল্প ইনফেকশন প্রতিরোধ: ডালিমের খোসা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে চুল ধুতে ব্যবহার করুন। এটি খুশকি এবং স্ক্যাল্প ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়ক।

    - হেয়ার প্যাক: খোসার গুঁড়ো মেহেদি ও দইয়ের সাথে মিশিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করতে পারেন। এটি চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় এবং চুল পড়া কমায়।

৩. পাচনতন্ত্রের উন্নতি:ডালিমের খোসার ব্যবহার

    - ডায়রিয়ার প্রতিকার: খোসার গুঁড়ো পানি বা দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।

    - গ্যাস ও এসিডিটি কমানো: খোসার চা পান করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং গ্যাস ও এসিডিটি কমে।

৪. ওজন কমানো:ডালিমের খোসার ব্যবহার

    - খোসার চা: ডালিমের খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে চা তৈরি করে পান করতে পারেন। এটি বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

৫. দাঁতের যত্ন:ডালিমের খোসার ব্যবহার

    - মাড়ির সমস্যা: ডালিমের খোসা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে মাড়ির সমস্যা ও মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।

৬. রক্ত শুদ্ধিকরণ:ডালিমের খোসার ব্যবহার

    - খোসার গুঁড়ো মিশ্রণ: ডালিমের খোসার গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে রক্ত শুদ্ধ হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ডালিমের খোসা প্রাকৃতিক উপায়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে এবং এটি ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। তবে ব্যবহারের আগে একটি ছোট অংশে পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো, বিশেষ করে ত্বক ও চুলের জন্য ব্যবহার করলে।

ডালিমের রসের উপকারিতা: 

ডালিমের রসের উপকারিতা অনেক এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিচে কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:

১. ডালিমের রস রক্তচাপ কমাতে ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ডালিমের রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং সাধারণ সর্দি-কাশি প্রতিরোধে কার্যকর।

৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ডালিমের রস ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক এবং বয়সের ছাপ কমাতে পারে।

৪. ডালিমের রসে ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৫. ডালিমের রস রক্তকে শুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়ক।

৬. ডালিমের রসে আয়রন থাকে, যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়াতে এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।

৭. ডালিমের রস কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে।

ডালিমের রসের এইসব উপকারিতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে বিবেচনা করতে সহায়ক। নিয়মিত ডালিমের রস পান করলে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।

আরো পড়ুনঃ আনারস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আনারস খাওয়ার নিয়ম

ডালিমের পুষ্টিগুণ: 

ডালিমের পুষ্টিগুণ

এখন আমরা জানব ডালিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে। ডালিম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং এতে অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। একটি মাঝারি আকারের ডালিমে (প্রায় ৮৭ গ্রাম ভোজ্য অংশ) নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান থাকতে পারে:

- ক্যালরি: প্রায় ৮৩ ক্যালরি

- প্রোটিন: ১.৭ গ্রাম

- ফ্যাট: ১.২ গ্রাম

- কার্বোহাইড্রেট: ১৮.৭ গ্রাম

  - ফাইবার: ৪ গ্রাম

  - চিনি: ১৩.৭ গ্রাম

- ভিটামিন সি: দৈনিক চাহিদার প্রায় ১৭% (১০.২ মিলিগ্রাম)

- ভিটামিন কে: দৈনিক চাহিদার প্রায় ৩৬% (১৬.৪ মাইক্রোগ্রাম)

- ফোলেট (ভিটামিন বি৯): দৈনিক চাহিদার প্রায় ১০% (৩৮ মাইক্রোগ্রাম)

- পটাসিয়াম: ২৩৬ মিলিগ্রাম

ডালিমের এই পুষ্টিগুণ শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপে সহায়ক এবং স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।

গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা: 

গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

এই পয়েন্টে আমরা আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে। গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়া মা এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য অনেক উপকারিতা প্রদান করতে পারে। নিচে কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:

১. ডালিমে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ফাইবার থাকে, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের এবং শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২. ডালিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে এবং মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৩. ডালিমে আয়রন রয়েছে, যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।

৪. ডালিমে ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।

৫. ডালিমে ফোলেট রয়েছে, যা শিশুর মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৬. ডালিম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, যা গর্ভাবস্থায় প্রি-এক্লাম্পসিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।

৭. ভিটামিন কে হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা মা এবং শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।

৮. ডালিমের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন প্রদাহজনিত সমস্যার উপশম করতে সহায়ক।

এইসব উপকারিতা গর্ভাবস্থায় ডালিমকে একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর ফল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। তবে, ডালিম খাওয়ার আগে এবং কোন নতুন খাদ্যাভ্যাস শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা: 

খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে ডালিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। নিচে কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:

১. খালি পেটে ডালিম খেলে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়ক হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

২. খালি পেটে ডালিম খেলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হতে বাধা দেয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৩. খালি পেটে ডালিম খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

৪. ডালিমে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।

৫. ডালিম রক্তকে শুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়ক।

৬. ডালিম খেলে তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি বাড়ায় এবং দিন শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।

খালি পেটে ডালিম খাওয়া শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে, যেকোনো নতুন খাদ্যাভ্যাস শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভাল।

শেষ কথা: আজকের পোষ্টটিতে আমরা ডালিমের উপকারিতা ও অপকারিতা, ডালিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি ডালিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করছি বুঝতে পারবেন। এই ধরনের পোস্ট পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url