ডাঁটা শাক খাওয়ার ১৫ উপকারিতা ও অপকারিতা
ডাটা শাকের ইংরেজি Stem amaranth এর বৈজ্ঞানিক নাম Enhydra fluctuans যা Astera ceae পরিবারভুক্ত। ডাঁটা শাঁক বাংলাদেশের অন্যতম গ্রীষ্মকালীন সবজি। আজকের আর্টিকেলে ডাঁটা শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ডাঁটা শাকের রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি,ডি, এবং ক্যালসিয়াম ও লৌহ। সব সবজিতে এত বেশি ভিটামিন থাকে না যত ভিটামিন ডাঁটা শাকে রয়েছে। এই শাক মাটিতে সবচেয়ে ভালো জন্মায়। এছাড়া ও বাড়ির ছাদে ও চাষ করা যায়।এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন ডাটা শাকের উপকারিতা, ডাটা শাকের অপকারিতা, ডাটা শাকের পুষ্টিগুন, ডাঁটা শাকের জাত সম্পর্কে ইত্যাদি। আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
পেজ সূচিপত্র: ডাঁটা শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- ডাঁটা শাঁকের উপকারিতা
- ডাঁটা শাঁকের অপকারিতা
- ডাঁটা শাকের পুষ্টিগুন
- ডাঁটা শাঁকের জাত
- ডাঁটা চাষে সার ব্যবস্থাপনা
- শেষ কথা: ডাঁটা শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ডাটা সব খুবই জনপ্রিয় একটি শাক। ছোট অবস্থায় এটি ভাজি করে খাওয়া যায়। গাছ যখন বড় হয় তখন সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।ডাটা শাকের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম ও আয়রন। ডাঁটা শাক চাষ খুবই কম খরচে যে কোন ধরনের মাটিতে ভালো জন্মায়। তাই বাংলাদেশের যে কোন জেলাতেই এটি হয়।
ডাঁটা শাকের উপকারিতা:
আরো পড়ুনঃ আনারস খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং আনারস খাওয়ার নিয়ম
১. ডাঁটা শাক হজমে সাহায্য করে। সব শাকসবজি হজমের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে ডাট শাকের রয়েছে হজম সাহায্যকারী এনজাইম যা হজমে সহায়তা করে।
২. ডাঁটা শাকে ক্যালরির মাত্রা কম থাকার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডাঁটা শাকে ক্যালরির মাত্রা খুবই কম পাশাপাশি ফ্যাট এর মাত্রা আরো কম। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে ডাঁটা শাকের ভূমিকা অনেক বেশি।
৩. ডাঁটা শাক ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ যারা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি সম্পর্কিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ডাঁটা শাক বেশ উপকারী।
৪. ডাঁটা শাকের রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাড় এবং দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয়।
৫. ডাঁটা শাকের রয়েছে ভিটামিন কে যা রক্ত জমাট বাঁধতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।
৬. ডাঁটা শাকে থাকে খনিজ উপাদান যা রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৭. ডাঁটা শাকের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফলিক এসিড যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৮. ডাঁটা শাকে অনেক ফাইবার থাকায় কোলেস্টেরল কমায়।
ডাঁটা শাকের অপকারিতা:
ডাঁটা শাকের উপকারিতা যেমন রয়েছে, তেমনি বেশ কিছু ডাঁটা শাকের অপকারিতা ও রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক, ডাঁটা শাক খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ করলা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং করলার পুষ্টিগুণ
১. গর্ভাবস্থায় ডাঁটা শাক খেলে মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, মেজাজ খিটখিটে থাকা ও আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২. যাদের ডায়াবেটিস সমস্যা রয়েছে তারা ডাঁটা শাক বেশি খাবেন না। অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়।
৩. ডাঁটা শাক পেট ভরতে সাহায্য করে তাই ডাঁটা শাক দুপুরে ও রাতে খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। এতে পেট জনিত সমস্যায় ভুগতে পারেন।
৪. যারা ওজন বাড়াতে চান তারা ডাঁটা শাক না খাওয়া ভালো। ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৫. ডাঁটা শাকে থাকে প্রোটিন লেডএক্স এর মত উপাদান, যা এলার্জির সমস্যা বৃদ্ধি করে দিতে পারে। তাই যাদের এলার্জি রয়েছে, তারা ডাঁটা শাক না খাওয়া ভালো।
ডাঁটা শাকের পুষ্টিগুন:
১০০ গ্রাম রান্না করা ডাঁটা শাকে পাওয়া যায় যে সকল পুষ্টি উপাদান।
ক্যালরি ৪৫ কিলোক্যালরি
মোট কার্বোহাইড্রেট ৯ গ্রাম
ফাইবার ৩ গ্রাম
প্রোটিন ৩ গ্রাম
ভিটামিন সি ৯০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ ৬০০ আই ইউ
ভিটামিন কে ৪০০ মাইক্রোগ্রাম
ক্যালসিয়াম ২০০ মিলিগ্রাম
আয়রন ৭ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৮০ মিলিগ্রাম।
ডাঁটা শাকের জাত:
ডাঁটা শাকের জাত গুলো অনেক ধরনের হয়ে থাকে, তার মধ্যে ভারী ডাঁটা১, বারে ডাটা ২, অপরাপা, রেড ম্যান, লাবনী জাদুগুলো উচ্চ ফলনশীল জাত হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও কিছু জাত রয়েছে যেগুলো সারা বছর চাষ করা হয়। যেমন পান্না, রেড টাওয়ার, গ্রীন টাওয়ার, রেড আর্মি, ভুটান সফট ইত্যাদি।
ডাঁটা চাষে সার ব্যবস্থাপনা:
কম্পোস্ট সার/পচা গোবর=৪০ কেজি
ইউরিয়া সার = ২৬৪ কেজি
টিএসপি সার=৮০০ গ্রাম
এমওপি = ৬০০ গ্রাম।
শেষ কথা: ডাঁটা শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ডাঁটা শাক একটি পুষ্টিকর খাবার। ডাঁটা শাক বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। ডাঁটা শাক ভাজি হিসেবে এবং ডাঁটা হিসেবে তরকারি করে খেলে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায়। সব শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। তাই নিয়ম মেনে খেলে কোন ক্ষতি হওয়া সম্ভাবনা থাকে না। এই পোস্টের মাধ্যমে আজকে ডাঁটা শাকের উপকারিতা অপকারিতা গুণাগুণ ও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url