শিমের ১৪ উপকারিতা অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়)
আজকে আপনাদের মাঝে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল তুলে ধরব। শিম আমরা প্রায় সবাই চিনি কিন্তু শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমরা অনেকেই জানি না। আজকে আলোচনা করব শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়) নিয়ে। শিম সম্পর্কে জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আশা করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়) সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এছাড়াও আমরা আরো আলোচনা করব শিমের বৈজ্ঞানিক নাম, শিমের বিচি খাওয়ার নিয়ম, শিমের বিচিতে কোন ধরনের ভিটামিন রয়েছে, শিমের মোজাইক রোগ, শিমের বিচি খাওয়ার উপকারিতা, শিমের বিচি খেলে কি ওজন বাড়ে, শিমের পুষ্টিগুণ ও ক্যালরি, শিম চাষের উপযুক্ত সময়, শিমের বিচির অ্যালাজি, শুকনো শিমের বিচির উপকারিতা ইত্যাদি।
পেজ সূচিপত্র: শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়)
- ভূমিকাঃ শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়)
- শিমের বৈজ্ঞানিক নাম
- শিমের উপকারিতা
- শিমের অপকারিতা
- শিমের বিচি খাওয়ার নিয়ম
- শিমের বিচিতে কোন ধরনের ভিটামিন রয়েছে
- শিমের মোজাইক রোগ ও প্রতিকার
- শিমের বিচি খাওয়ার উপকারিতা
- শিমের পুষ্টিগুণ ও ক্যালরি
- শিম চাষের উপযুক্ত সময়
- শিমের বিচির অ্যালাজি
- শুকনো শিমের বিচির উপকারিতা
- শেষ কথাঃ শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়)
ভূমিকাঃ শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়)
শিম একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি যা প্রায় সব দেশেই ব্যাপকভাবে চাষ হয়। এটি ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস। শিমের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, যেমন সবুজ শিম, মটরশুঁটি এবং বিনস। শিমের স্বাদ এবং পুষ্টিগুণের জন্য এটি বিভিন্ন রকমের খাবারে ব্যবহার করা হয়। এটি সহজেই চাষযোগ্য এবং বিভিন্ন ধরনের মাটিতে ভালভাবে বেড়ে ওঠে। শিমের স্বাস্থ্য উপকারিতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে হার্টের সুস্থতা, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি। এবার চলুন শিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।
শিমের বৈজ্ঞানিক নাম:
শিমের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Phaseolus vulgaris। এটি সাধারণ সবুজ শিম বা সাধারণ শিম নামে পরিচিত।
শিমের উপকারিতা:
শিমের অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক উন্নত করতে সহায়ক। নিচে কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
১. পুষ্টি সমৃদ্ধ: শিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন (যেমন, ভিটামিন C, K) এবং খনিজ (যেমন, লোহা, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম) থাকে।
২. প্রোটিন উৎস: শিম প্রোটিনের একটি ভাল উৎস, যা শরীরের কোষ ও টিস্যু গঠনে সহায়ক।
৩. হজমে সহায়ক: শিমে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ: ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে শিম ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরতি রাখতে সহায়ক, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
৫. হার্টের জন্য ভাল: শিমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে, যা কোলেস্টেরল কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৬. রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণ: শিমের নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে এটি রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
৭. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: শিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে রক্ষা করে, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
৮.ত্বকের জন্য উপকারী: শিমে থাকা ভিটামিন ও খনিজ ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।
শিমের এইসব উপকারিতা পেতে নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে শিম খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
শিমের অপকারিতা :
যদিও শিমের অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে কিছু অপকারিতাও থাকতে পারে। নিচে শিম খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
১. অতিরিক্ত ফাইবার: শিমে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস বা পেটব্যথার কারণ হতে পারে।
২. অ্যলার্জি: কিছু মানুষের শিমের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যা খাওয়ার পর চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৩. অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্টস: শিমে ফাইটিক অ্যাসিড ও লেকটিন থাকে, যা কিছু ক্ষেত্রে পুষ্টি উপাদান শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে সঠিকভাবে রান্না করলে এই উপাদানগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব কমে যায়।
৪. ওজন বৃদ্ধি: অতিরিক্ত পরিমাণে শিম খেলে ওজন বাড়তে পারে, বিশেষ করে যদি এটি উচ্চ-ক্যালোরি খাবারের সাথে খাওয়া হয়।
৫. ডাইজেস্টিভ সমস্যা: শিমে ওলিগোস্যাকারাইড থাকে, যা কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৬. পিউরিনের পরিমাণ: শিমে পিউরিন থাকে, যা কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড বাড়িয়ে গাউটের সমস্যা বাড়াতে পারে।
শিম খাওয়ার সময় এইসব বিষয়গুলি মনে রেখে সঠিক পরিমাণে ও সঠিকভাবে রান্না করে খেলে অপকারিতা এড়ানো সম্ভব।
শিমের বিচি খাওয়ার নিয়ম:
শিমের বিচি খাওয়ার নিয়ম নিয়ে কিছু সাধারণ পরামর্শ হলো:
১. পরিষ্কার করা: শিমের বিচি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
২. উপযুক্ত পরিমাণ: প্রতিদিন ১ কাপ থেকে ১.৫ কাপ শিমের বিচি খাওয়া যেতে পারে, তবে নিজের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
৩. রান্না করা: শিমের বিচি সেদ্ধ করে বা রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। কিছু রেসিপি হল শিমের বিচির তরকারি, সালাদ বা স্যুপ।
৪. মশলা ব্যবহার: রান্নার সময় পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, মরিচ গুঁড়া ইত্যাদি মশলা ব্যবহার করে স্বাদ বৃদ্ধি করা যায়।
৫. সময়ের নির্ধারণ: শিমের বিচি যে কোনো সময় খাওয়া যায়, তবে সাধারণত দুপুর বা রাতের খাবারে যুক্ত করা ভাল।
শিমের বিচি প্রচুর প্রোটিন, ফাইবার এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলস সরবরাহ করে, যা স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অংশ হিসেবে উপকারী।
শিমের বিচিতে কোন ধরনের ভিটামিন রয়েছে:
শিমের বিচিতে অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি ভিটামিন হল:
১. ভিটামিন A: চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
২. ভিটামিন C:রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
৩. ভিটামিন K: রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় সহায়ক এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
৪. ভিটামিন B6: মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মেটাবলিজমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫. ফলেট (ভিটামিন B9): নতুন কোষ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
শিমের বিচি একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যা বিভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেল সরবরাহ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
শিমের মোজাইক রোগ ও প্রতিকার:
শিমের মোজাইক রোগ হলো একটি সাধারণ ভাইরাসজনিত রোগ যা শিম গাছকে আক্রমণ করে এবং ফলে উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে পারে। এ রোগের কারণে গাছের পাতা এবং ফলের উপর মোজাইক প্যাটার্ন বা ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়।
শিমের মোজাইক রোগ লক্ষণ:
১. পাতায় মোজাইক প্যাটার্ন: পাতা ফ্যাকাশে বা গাঢ় সবুজ দাগে পরিণত হয়।
২. বিকৃত বৃদ্ধি: গাছের বৃদ্ধি বিকৃত হতে পারে, ফল ছোট বা বিকৃত হতে পারে।
৩. পাতার কোঁকড়ানো: পাতাগুলি মোচড়ানো বা কোঁকড়ানো হতে পারে।
৪. ফলের বিকৃতি: ফল সঠিক আকারে গঠিত হয় না এবং ফলন কমে যায়।
শিমের মোজাইক রোগ প্রতিকার:
১. রোগ প্রতিরোধী জাত: রোগ প্রতিরোধী শিমের জাত বেছে নেওয়া।
২. সুস্থ বীজ: রোগমুক্ত এবং প্রত্যয়িত বীজ ব্যবহার করা।
৩. গাছের পরিচর্যা: ক্ষতিগ্রস্ত গাছ বা পাতা দ্রুত অপসারণ করা।
৪. পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ: অ্যাফিডস এবং অন্যান্য পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে রাখা, যেগুলো এই ভাইরাসটি ছড়াতে সাহায্য করে।
৫. পরিচ্ছন্নতা: বাগানের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং পূর্বে আক্রান্ত গাছের অংশগুলো ধ্বংস করা।
৬. কৃষি যন্ত্রপাতি পরিষ্কার রাখা: বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার আগে এবং পরে ভালোভাবে পরিষ্কার করা, যাতে ভাইরাস ছড়াতে না পারে।
৭. ফসলের চক্র: শিমের ফসলের সঙ্গে অন্যান্য ফসল পর্যায়ক্রমে লাগানো, যা ভাইরাসের চক্র ভেঙে দিতে সাহায্য করে।
শিমের মোজাইক রোগ নিয়ন্ত্রণে উপরে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যায় এবং রোগের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা সম্ভব।
শিমের বিচি খাওয়ার উপকারিতা:
শিমের বিচি একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যা বিভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেল সরবরাহ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শিমের বিচি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যেমন:
১. পুষ্টিকর: শিমের বিচিতে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেলস যেমন ভিটামিন C, ভিটামিন K, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম, এবং পটাশিয়াম থাকে।
২. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ শিমের বিচি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৩. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক: শিমের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কার্যকর।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ: শিমের বিচি খেলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকে, যা ক্ষুধা কমাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৫. শক্তি বৃদ্ধি: প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ হওয়ায় শিমের বিচি শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এতে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৭. রক্ত শুদ্ধিকরণ: শিমের বিচিতে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস রক্ত শুদ্ধিকরণে সহায়ক।
শিমের বিচি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হতে পারে।
শিমের বিচি খেলে কি ওজন বাড়ে:
শিমের বিচি খেলে ওজন বাড়তে পারে, তবে এটি নির্ভর করে কতটা এবং কিভাবে খাচ্ছেন তার উপর। শিমের বিচিতে প্রোটিন ও ফাইবার থাকে, যা পেট ভরে রাখতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। যদি শিমের বিচি পরিমিতভাবে খাওয়া হয় এবং সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তাহলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে, বিশেষত যদি অন্যান্য উচ্চ-ক্যালোরি খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়, তাহলে ওজন বাড়তে পারে।
শিমের বিচির পুষ্টিগুণ ও ক্যালরি:
শিম (বা বীন) খুব পুষ্টিকর একটি খাদ্য। এতে প্রধানত নিম্নলিখিত পুষ্টিগুণ থাকে:
পুষ্টিগুণ:
- প্রোটিন: শিমে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন থাকে, যা শরীরের পেশী গঠন এবং মেরামতে সাহায্য করে।
- ফাইবার: হজমের জন্য উপকারী এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
- ভিটামিন: ভিটামিন A, C, K এবং B ভিটামিনের ভালো উৎস।
- খনিজ: পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, এবং আয়রনের ভালো উৎস।
ক্যালরি:
১০০ গ্রাম শিমে সাধারণত প্রায় 30-40 ক্যালোরি থাকে। তবে, রান্নার পদ্ধতি ও শিমের প্রকারভেদে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
শিম আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা হলে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর বিকল্প হতে পারে।
শিম চাষের উপযুক্ত সময়:
বাংলাদেশে:
- বসন্তকাল (মার্চ-এপ্রিল): এই সময়ে শিম চাষ করা হলে ফলন ভালো হয়।
- বর্ষাকাল (জুন-জুলাই): monsoon মৌসুমে বিভিন্ন প্রকারের শিম চাষ করা যায়।
অন্যান্য বিষয়:
- মাটি প্রস্তুতি এবং সেচের সঠিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
- আবহাওয়া সুষ্ঠু এবং তাপমাত্রা ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া উচিত।
আপনার অঞ্চলের আবহাওয়ার অনুযায়ী সময় নির্বাচন করা উচিত।
শিমের বিচির অ্যালাজি:
শিমের বিচির অ্যালার্জি হতে পারে। কিছু মানুষের জন্য শিমের প্রোটিন অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, যা বিভিন্ন উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে, যেমন:
- চর্মরোগ (চুলকানি বা র্যাশ)
- পেটের সমস্যা (যেমন, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া)
- শ্বাসকষ্ট
- মুখ, ঠোঁট বা গলার ফোলাভাব
যদি আপনি শিম খাওয়ার পর কোনো অ্যালার্জির লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শুকনো শিমের বিচির উপকারিতা:
শুকনো শিমের বিচির বেশ কয়েকটি উপকারিতা আছে:
### ১. পুষ্টিগুণ
শুকনো শিমের বিচিতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকে, যা স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
### ২. হজমে সহায়তা
এতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
### ৩. রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ
শুকনো শিমের বিচি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিসে উপকারী।
### ৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ
ফাইবারের কারণে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি রাখে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
### ৫. হার্টের স্বাস্থ্য
শুকনো শিমের বিচি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়, কারণ এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
### ৬. শক্তি বৃদ্ধি
এতে থাকা প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
শুকনো শিমের বিচি খাদ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে।
শেষ কথাঃ শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়)
শিমের বিচি একটি পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান, যা স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ, যা হজম, হৃদস্বাস্থ্য এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। নানা রান্নায় ব্যবহারযোগ্য এই বিচি সহজলভ্য এবং স্বাদে বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম। তাই শিমের বিচি আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি অপরিহার্য উপাদান।
শিমের বিচি এক অনন্য প্রাকৃতিক উপাদান, যা আমাদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিন থাকে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্যে শিমের বিচি যুক্ত করলে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পাচনতন্ত্রকে সুষ্ঠু রাখতে সাহায্য করে। তাই, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অংশ হিসেবে শিমের বিচি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে।
শিমের বিচি কেবল একটি খাদ্য উপাদানই নয়, বরং এটি আমাদের জীবনযাত্রায় সুস্থতা এবং স্বাস্থ্যের জন্য একটি মূল্যবান অংশ।
আজকের আর্টিকেলে আমরা শিমের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ(শিম চাষের উপযুক্ত সময়) সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এছাড়াও জানতে পেরেছেন শিমের বৈজ্ঞানিক নাম, শিমের বিচি খাওয়ার নিয়ম, শিমের বিচিতে কোন ধরনের ভিটামিন রয়েছে, শিমের মোজাইক রোগ ও প্রতিকার, শিমের বিচি খাওয়ার উপকারিতা, শিমের বিচি খেলে কি ওজন বাড়ে, শিমের পুষ্টিগুণ ও ক্যালরি, শিম চাষের উপযুক্ত সময়, শিমের বিচির অ্যালাজি, শুকনো শিমের বিচির উপকারিতা, ইত্যাদি। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে অনেক উপকৃত হবেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আল্লাহ হাফেজ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url